দইকাতলা হল একটি সুস্বাদু বাঙালি মাছের পদ, যেখানে মাছকে মশলা ও দইয়ের সাথে রান্না করা হয়। এটি মূলত কাতলা মাছ দিয়ে তৈরি হয়, তবে রুই মাছও ব্যবহার করা যায়।
উপকরণ:
কাতলা মাছ – ৫-৬ টুকরো
দই – ১/২ কাপ
পেঁয়াজ বাটা – ২ টেবিল চামচ
রসুন বাটা – ১ চা চামচ
আদা বাটা – ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
লাল মরিচ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
ধনে গুঁড়ো – ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
গরম মসলা গুঁড়ো – ১/২ চা চামচ
তেজপাতা – ১টি
শুকনো লঙ্কা – ১টি
কাঁচা লঙ্কা – ২-৩টি
সর্ষের তেল – ৪-৫ টেবিল চামচ
নুন – স্বাদ অনুযায়ী
চিনি – ১/২ চা চামচ
জল – পরিমাণমতো
প্রস্তুত প্রণালী:
1. মাছ ভাজা:
মাছের টুকরোগুলোতে হলুদ ও নুন মাখিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন।
কড়াইতে সর্ষের তেল গরম করে মাছের টুকরোগুলো লালচে করে ভেজে তুলে রাখুন।
2. মশলা রান্না:
কড়াইতে তেল গরম করে তেজপাতা ও শুকনো লঙ্কা ফাটিয়ে দিন।
এরপর পেঁয়াজ বাটা দিয়ে মাঝারি আঁচে ভাজুন যতক্ষণ না সোনালি হয়।
রসুন ও আদা বাটা দিয়ে নাড়াচাড়া করুন।
লাল মরিচ, ধনে, জিরা ও হলুদ গুঁড়ো দিয়ে কিছুক্ষণ কষান।
দই ভালোভাবে ফেটিয়ে কড়াইতে ঢেলে দিন এবং ভালোভাবে মশলার সাথে মিশিয়ে নাড়ুন।
3. মাছ দেওয়া:
কষানো মশলায় ১ কাপ গরম জল দিন এবং ফুটতে দিন।
মাছের টুকরোগুলো দিয়ে ৫-৭ মিনিট ঢেকে রান্না করুন।
স্বাদ অনুযায়ী নুন ও চিনি দিন।
শেষে কাঁচা লঙ্কা ও গরম মসলা ছড়িয়ে দিন এবং ২ মিনিট পর নামিয়ে নিন।
পরিবেশন:
গরম গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করুন সুস্বাদু দইকাতলা।
আপনি চাইলে রান্নায় সামান্য কেশর বা একটু ঘি যোগ করে বাড়তি স্বাদ আনতে পারেন!
Doi katla recipe in bengali
দই কাতলা সম্পর্কে কিছু তথ্য
দই কাতলা একটি জনপ্রিয় বাঙালি মাছের রেসিপি, যেখানে কাতলা মাছকে দই ও মশলার সাথে রান্না করা হয়। এটি সাধারণত বিশেষ উপলক্ষ, অতিথি আপ্যায়ন বা রবিবারের লাঞ্চে পরিবেশিত হয়।
১. উত্স ও জনপ্রিয়তা:
এটি পূর্ব ভারতের (বাংলা, ওড়িশা, বিহার) একটি ঐতিহ্যবাহী পদ।
মূলত বাঙালি খাবারের অংশ হলেও বিহারি ও ওড়িয়া রান্নাতেও এর কিছু ভিন্ন সংস্করণ পাওয়া যায়।
এটি বাঙালিদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় কারণ দই রান্নায় খাটতে সুবিধাজনক এবং স্বাদেও দারুণ।
২. পুষ্টিগুণ:
কাতলা মাছ উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স থাকে, যা হার্টের জন্য ভালো।
দই প্রোবায়োটিক ও ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস, যা হজমের জন্য উপকারী।
এই পদ কম তেল ও কম মসলা ব্যবহার করে বানানো যায়, তাই এটি স্বাস্থ্যকর মাছের পদগুলোর মধ্যে অন্যতম।
৩. রান্নার বিশেষত্ব:
দই ব্যবহার করার কারণে এই রান্নায় একটু টক-মিষ্টি স্বাদ থাকে, যা সাধারণ মাছের ঝোল থেকে আলাদা।
কাঁচা লঙ্কা ও গরম মসলা যোগ করলে এর স্বাদ আরও সুন্দর হয়।
সর্ষের তেলে রান্না করলে আসল বাঙালি স্বাদ পাওয়া যায়, তবে অনেকে সাদা তেলেও রান্না করেন।
৪. পরিবেশন ও উপযোগিতা:
সাধারণত গরম ভাতের সাথে পরিবেশন করা হয়।
রোদের দিনে বা গরম কালে দইয়ের উপস্থিতির কারণে এটি হালকা ও উপকারী মনে হয়।
এই রান্নাটি বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না, তাই টাটকা খাওয়াই ভালো।
দই কাতলা সহজেই বানানো যায়, কিন্তু দই ফাটার ঝুঁকি থাকে, তাই ধীরে ধীরে ও সাবধানে রান্না করাই বুদ্ধিমানের কাজ!
0 Comments